গাজীপুর, ২৮ অক্টোবর : গাজীপুরের টঙ্গীর টিঅ্যান্ডটি কলোনি জামে মসজিদের খতিব ও পেশা ইমাম মুফতি মহিবুল্লাহ মিয়াজীর (৬০) নিখোঁজের ঘটনা চার দিন পর রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি অপহৃত হননি, বরং স্বেচ্ছায় টঙ্গী থেকে বের হয়ে পঞ্চগড় গিয়েছিলেন। সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাতে তাঁকে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়। আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) তাকে আদালতে তোলা হবে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) এক কর্মকর্তা জানান, তদন্তে প্রমাণ মিলেছে মহিবুল্লাহকে ইসকন কর্তৃক অপহৃত করার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাঁর গতিবিধি ট্র্যাক করে জানা গেছে, তিনি নিজে শ্যামলী পরিবহনের বাসে পঞ্চগড় গিয়েছিলেন। এই ঘটনায় মহিবুল্লাহর সঙ্গে একই বাসে থাকা যাত্রী ও বাসের সুপারভাইজারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মহিবুল্লাহ নিজেই ঘটনার বিস্তারিত স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমি প্রথমে শুধু হাঁটতে বের হয়েছিলাম। হঠাৎ মনে হলো চলতে থাকি, যাই যেকোনো দিকে। অটো, সিএনজি, বাস সবই নিজের ইচ্ছায় চেপে পঞ্চগড়ে পৌঁছালাম। নামার পরে পা ও হাতে শিকল দিলাম, শীতের মধ্যে শুয়ে পড়লাম। যা করছিলাম, কোনো চিন্তাভাবনা ছাড়াই, মাথায় যা আসছিল তাই করেছি।”
আলজাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের সামি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জানান, অপহরণের দাবি সম্পূর্ণ অসঙ্গত। ফুটেজে দেখা যায়, মহিবুল্লাহ ২২ অক্টোবর সকাল ৬:৫২ মিনিটে বাসা থেকে বের হন, ৬টা ৫৩ মিনিটে মসজিদ ত্যাগ করেন, এবং ৭টা ১৮ মিনিটে শিলমুন সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে দিয়ে দ্রুত হেঁটে যাচ্ছেন। চারটি ভিন্ন এঙ্গেলের ফুটেজেও অপহরণের কোনো চিহ্ন নেই। স্থানীয় ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. সোলেইমানও নিশ্চিত করেছেন, পুলিশের পর্যবেক্ষণে হুজুরকে এখানে থেকে অপহরণ করা হয়নি।
মহিবুল্লাহ ২২ অক্টোবর সকালে টঙ্গীর বাসা থেকে হাঁটতে বের হন এবং পরদিন পঞ্চগড় সদর উপজেলার সিতাগ্রাম এলাকায় মহাসড়কের পাশে শিকলবদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার হন। পরে টঙ্গী পূর্ব থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
এবার সত্য উদঘাটিত হওয়ার পর, দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে, কেন একজন খতিব এমন নাটক সাজালেন, এবং এই ঘটনার সামাজিক প্রভাব কী হতে পারে। মুহিব্বুল্লাহ মিয়াজী সামাজিক মাধ্যমে মাওলানা মুফতি মুহিব্বুল্লাহ মাদানী নামেই বেশি পরিচিত।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan

সুপ্রভাত মিশিগান ডেস্ক :